বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

সরকার চামড়া শিল্পকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে: ড. মোশাররফ

আলমগীর হোসেন
  • Update Time : শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৯
  • ৬৭১ Time View

বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এবছর পবিত্র ঈদুল আযহা দেশের মানুষ মনের আন্দনে উদযাপন করতে পারেনি ।  চামড়ার নিম্নমানের দাম ,ডেঙ্গু ,প্লাবিত বন্যায় দেশের মানুষ ঈদ উৎসবের কোন আমেজ পায়নি । এমন পেক্ষাপটে মানুষ ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে পারেনি । তার আগে দেশে বন্যা হয়েছে । প্রায় এক তৃতীয়াংশ দেশের মানুষ প্লাবিত। তাদের মাঝেও ঈদের আনন্দ ছিলো না। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হলো বিএনপি । বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে । আমাদের বিএনপি পরিবারেও ঈদ আনন্দ ছিলো না। সবশেষ ঈদের পরে যে ঘটনাটি ঘটলো তা আরো হৃদয়বিদারক । কোরবানীর চামড়া বছরে একবার যে পরিমান হয় সেটার মাধ্যমে আমাদের সম্পূর্ণ চামড়া শিল্পটা প্রতিষ্ঠিত ছিলো। এবার  সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিছু লোক লাভবান হওয়ার জন্য যা করা হয়েছে এতে ভবিষ্যতে চামড়া শিল্প টিকে থাকবে কিনা সন্দেহ । এবার আমরা দেখেছি এতিমখানার চামড়াগুলো তারা বিক্রি করতে পারেনি । সারা দেশে বহু জায়গায় চামড়াগুলো মাটির নিচে পুতে দেওয়া হয়েছে। এদেশের বেশির ভাগ এতিমখানাগুলো চামড়ার টাকায় চলে। এই এতিমদের রিযিকের উপর আঘাত করা হয়েছে। এতিমখানার চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য যে ট্রাক ভাড়া করা হয়েছে সে ট্রাক ভাড়াও আসেনি। অতত্রব সারা দেশের এতিমখানাগুলো বঞ্চিত হলো। ড. মোশাররফ আরো বলেন, আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের পরেই চামড়া শিল্প থেকে আমারা বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করতাম । আজ  এই শিল্পকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে । এদেশে পাট শিল্প সারা বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ ছিলো। কিন্তু আজকে যারা সরকারে, স্বাধীনতা পরেই তারাই সরকারে ছিলো । তাদের অযোগ্যতার কারনেই এখন এই পাট শিল্পের অস্তিত্ব নাই । ঠিক তেমনি পরিকল্পিত ভাবে চামড়া শিল্প ধ্বংস করে দেওয়া হলো। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো সাধারণ মানুষ ও এতিমরা । এটি জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট একটা প্রতিক্রিয়া হবে। সার্বিকভাবে এটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। এঘটনার পরে ঈদের কোন আনন্দ থাকতে পারে না।  সরকারের সর্বক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার কারনে একের পর এক বিপর্যয় আসছে। তিনি আরো বলেন, দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা শহর থেকে আজ গ্রাম পর্যন্ত পৌছে গেছে, এতে মানুষের মনে  আতষ্ক বিরাজ করছে । প্রথম দিকে সরকার এবং সিটি করপোরেশন বলেছে এগুলো গুজব । এব্যাপারে কোন রকমের গুরুত্ব দেয়া হয়নি। সরকার সময় উপযোগী প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা না করায় ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারন করেছে। ড. মোশাররফ বলেন, দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিলো। যদি বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সাথে সুসর্ম্পক  ও আলোচনার ভিত্তিতে আমাদের উজানে যে ৫৪টি নদীর বাধ আছে তা পর্যায়ক্রমে ছাড়া হতো তাহলে বন্যায় আমাদের এত ক্ষতি হতো না। এই সমঝোতা ভিত্তিতে  আলোচনা  না থাকায় এক সাথে ৫৪টি বাধ খুলে দেয়াতে বাংলাদেশের এত বড় ক্ষতি হলো।  এর কারণে যে  ফসল বিলিন হয়েছে তা  পোষানোর নয়। প্রত্যেক দিন দেশ গরীব হচ্ছে । গরীব আরো গরীব হচ্ছে, গুটি কয়েক জন ধনী আরো ধনী হচ্ছে। আর সরকার বলছে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছি। এগুলো বক্তৃতার জন্য চাপাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। এটা কোনো দেশে অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর নয়। আমরা যে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি, স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মধ্যে ছিলো সাম্য এবং সম্পদের সুষম বন্টন। সরকারের ব্যর্থতায় আজকে সম্পদের সুষম বন্টন হচ্ছে না। ফলে ইচ্ছাকৃত ভাবে একটি গুষ্ঠিকে ধনী করার জন্য এই অবস্থা সৃষ্টি করেছে সরকার ।  ড. মোশাররফ দেশের পরিসংখ্যান বুরো তথ্য তুলে ধরে বলেন,  ২০১০ সাল পর্যন্ত সর্বনিন্ম দারিদ্র ও সর্ব্বোচ্চ ধনীর মধ্যে যে আয়রে পার্থক্য ছিলো তা ৩১ গুন বেশী। আর এ ৮ বছরে দুই পক্ষের মধ্যে পার্থক্য ১৩১ গুন বেশী। আমরা যদি বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরন করতে চাই, যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পূরন করতে চাই, তাহলে গনতন্ত্র থাকতে হবে। এদেশের সবাই জানে এখন গনতন্ত্র  নেই। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন হয়েছে ২৯ তারিখ রাতে সেখানেই গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। এ সরকার যেহেতু জনগণের সরকার নয় তাদের প্রতি জনগণের কোনো সমর্থন নেই।  আর এ কারনে সব ব্যাপারে  সরকাবের  অব্যবস্থাপনা, দূণীর্তি  । ১৬ আগষ্ট শুক্রবার ড. মোশাররফ হোসেন তার বাসভবন দাউদকান্দি সদরে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে  দলীয় নেতাকর্মীদের এসব কথা বলেন। অপরদিকে বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপি’র নিবাহী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার ড. খন্দকার মারুফ হোসেন বলেন, আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের মা, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে। আমি আইজীবী হিসেবে বলতে পারি, এই মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিন্দু মাত্র সম্পর্ক ছিলো না। মামালার আইনে যে সকল স্বাক্ষী দেয়া হয়েছে, যেখানেও বেগম খালেদা জিয়ার কোন স্বাক্ষর করেছেন এ ধরনের কোন ব্ক্তব্য আমরা দেখেনি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ জনক এধরনের মামলায় অনেকেই জামিন পেয়েছেন। এমনকি হত্যা মামলার আসামিও জামিন পায়। যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতার জন্য লড়াই করছেন তাই তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। সবশেষ হাটকোর্টে তার জামিন না মঞ্জুর হয়েছে। আমাদের সিনিয়র আইনজীবীরা মহামান্য সুপ্রিমকোর্টে আপীল বিভাগে নেত্রীর জন্য জামিন চাইবেন। আমরা আশা করি আপীল বিভাগ স্বাক্ষ্য প্রমাণে দেখে বেগম জিয়ার জামিন মঞ্জুর করবেন। যদি আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন না হয় আমরা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করবো।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Suchana Community TV
themebazsuchana231231