চলতি মাসেই খুলে দেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই খুলবে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়। অবশ্য এই সময়ের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধন শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু এবং আবাসিক হল খুলে দিতে পারবে। গতকাল মঙ্গলবার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হল খোলা এবং শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও ভিসিদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি। বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য নিবন্ধন শেষ করতে বলা হয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ নিজ একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে তাদের আবাসন হল খুলে দিতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করে টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করতে হবে
এ দিকে যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কারণে করোনার টিকা নিতে পারছেন না তাদের টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য বিশেষ একটি অ্যাপস তৈরির জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কারণে করোনার টিকা নিতে পারছেন না, তাদের টিকার আওতায় আনার জন্য ইউজিসি একটি অ্যাপস তৈরি করবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করবে। এরপর ইউজিসি সেসব তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। এরপর শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সভায় ইউজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী আজ পর্যন্ত সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছে সাড়ে চার লাখ, আর দুই ডোজ নিয়েছে ৯০ হাজার শিক্ষার্থী।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ধাপে ধাপে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তখন জানানো হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা শুরু হবে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে। তবে এর আগে সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টিকা সংক্রান্ত তথ্য পাঠাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি)। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় শতভাগ টিকার আওতায় আসবে সেগুলো আগে খুলবে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর গত রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সোমবার খুলেছে মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল ও নার্সিং সংক্রান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।