রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩৭ অপরাহ্ন

দেশবরেণ্য বর্ষীয়াণ রাজনীতিক ড.মোশাররফের ৭৬তম জন্মদিন আজ

আলমগীর হোসেন,দাউদকান্দি।।
  • Update Time : শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১
  • ২১৬ Time View

আজ শুক্রবার দেশবরেণ্য সিনিয়র রাজনীতিক ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ৭৬ তম জন্মদিন। তিনি ১৯৪৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ঢাবি’র ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, প্রথিতযশা ভূ-বিজ্ঞানী এবং খ্যাতিমান লেখক। ড.মোশাররফ দাউদকান্দি হাইস্কুল থেকে ১৯৬২ সালে মেট্রিকুলেশন, চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে আই.এসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে এম.এসসি, ১৯৭০ সালে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে এম.এসসি, ১৯৭৩ সালে ডিআইসি ডিপ্লোমা এবং ১৯৭৪ সালে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে বিলাত থেকে দেশে ফিরে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন এবং পর্যায়ক্রমে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূ-তত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবার জন্য তিনি ঢাবি’র শিক্ষকতা থেকে পদত্যাগ করেন। এই আলোকিত রাজনীতিক ১৯৬৪-১৯৬৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাবি’র সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এজিএস এবং ১৯৬৭-১৯৬৮ শিক্ষাবর্ষে হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের ভিপি নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টির জন্য ড.মোশাররফ ১৯৭১ এ বিলাত প্রবাসীদের সংগঠিত করেন এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক হিসাবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন। বিভিন্ন সরকারের মামলায় ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১৯৮৬,১৯৯৬,২০০৭,২০১২ এবং ২০১৪ সালে গ্রেফতার হয়ে প্রায় ৫ বছর কারান্তরীণ ছিলেন। ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ঢাবি’র এই মেধাবী শিক্ষক বিএনপিতে যোগদান করেন। ড.মোশাররফ বিএনপি’র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। ড.মোশাররফ কুমিল্লা-২ আসন থেকে ৪ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের বিদ্যুৎ,জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী, ১৯৯৬ সালে স্বল্প মেয়াদে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ২০০১-২০০৬ মেয়াদে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি”প্লাবণ ভূমিতে মৎস্য চাষ”পদ্ধতির উদ্ভাবক। এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে ড.মোশাররফ বাংলাদেশে মৎস্য খাতের উন্নয়নে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। ‘প্লাবণ ভূমিতে মৎস্য চাষ পদ্ধতি’ দাউদকান্দি মডেল হিসাবে সরকারী স্বীকৃতি পেয়েছে। মৎস্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ড.মোশাররফ জাতীয় পুরস্কার স্বর্ণপদক লাভ করেন। ২০০৩ সালে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬ তম সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর সভাপতিত্বে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) গৃহীত হয়। বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন এবং বিশ্বব্যাপী তামাক বিরোধী আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ড.মোশাররফকে ‘World no tobacco award-2004’ পদকে ভূষিত করেন।।ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনের লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধে বিলাত প্রবাসীদের অবদান’, ‘প্লাবণ ভূমিতে মৎস্য চাষ: দাউদকান্দি মডেল’, ‘সংসদে কথা বলা যায়’, ‘এই সময়ের কিছু কথা’,’ ‘ফখরুদ্দিন- মইন উদ্দিনের কারাগারে ৬১৬ দিন’, ‘রাজনীতির হালচাল’, ‘সময়ের ভাবনা’ এবং ‘জরুরী আইনের সরকারের দুই বছর (২০০৭ ও ২০০৮)’ নামের ৮টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাময়িকিতে তাঁর ৫০টির বেশী বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ভূ-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মৌলিক গবেষণা ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ড.মোশাররফের জীবনবৃত্তান্ত ‘Who is in the World’ কেমব্রীজ বায়োগ্রাফি জার্নাল এবং আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইন্সটিটিউট প্রকাশিত পুস্তকে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ভূ-তত্ত্ব বিষয়ে স্ট্রাকচারাল এ্যানালাইসিসে তাঁর নতুন উদ্ভাবন ‘Hossains method of extension’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি নোবেল পুরুস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী প্রফেসর আব্দুস সালাম প্রতিষ্ঠিত আইসিটিটি’র এসোসিয়েট সদস্য এবং Third World academy of science এর একজন ফেলো। তিনি ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, ‘১ অক্টোবর আমার জন্মদিন! আল্লাহ-তায়লার অসীম রহমতে, আপনাদের দোয়ায় সুস্থভাবে বেঁচে আছি। এই জন্য আমি পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি! শোকর আলহামদুলিল্লাহ! তিনি বলেন,’আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, আমি কখনোই ঘটা করে জন্মদিন পালন করিনি। বাংলাদেশে বর্তমানে করোনা আগ্রাসনের তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু করোনা এখনও বিরাজমান। মহামারির আতংক কাটেনি। মানুষ চরম উৎকন্ঠা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অতীব জরুরী। এই বিষয়ে গাফিলতি করার কোন সুযোগ নেই। এমতাবস্থায় আমার জন্মদিনে অনেক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ভীতিকর । তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি দলীয় নেতা-কর্মীসহ সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Suchana Community TV
themebazsuchana231231