দাউদকান্দির চিনামুরা এল. এন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী শারমীন (ছদ্মনাম) । ২০১৫ সালে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। হঠাৎ বিয়ের আয়োজনে ভেঙ্গে যেতে বসেছিল তার সোনালী স্বপ্নের। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিয়ের পীড়িতে বসতে হচ্ছিল তাকে। শুক্রবার রাতের আঁধারে সব আয়োজন করা হয়েছিল । স্থানীয় একজন সচেতন নাগরিক আলোক বর্তিকা হয়ে ৩৩৩ তে ফোন করে বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠানের খবর জানিয়ে দেয়। কল সেন্টার থেকে দাউদকান্দি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল ইসলাম খানকে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তাৎক্ষনিক দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। আনুমানিক রাত সাড়ে ১১ টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একজন মেধাবী ছাত্রীকে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা করেন। ইতোমধ্যে খবর পেয়ে বর কনের বাড়িতে না এসে পথিমধ্যে ফিরে চলে যায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কনের পিতা, মাতাসহ উপস্থিত সকলকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনটির বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। পরবর্তীতে কনের পিতা-মাতা তাদের ভূল বুঝতে পারেন এবং কনের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দিবেননা মর্মে লিখিতভাবে অংঙ্গিকার করেন। অন্যদিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের সহযোগিতায় বর পক্ষকে আদালতের সামনে হাজির করা হলে সে তার দোষ স্বীকার করেন এবং ১৮ বছরের কম কোন মেয়েকে বিয়ে করবেন না মর্মে আদালতের সামনে অংঙ্গিকার করেন। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৫ ধারা মোতাবেক ভ্রাম্যমাণ আদালত অত্যাসন্ন বাল্যবিবাহের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন এবং এই আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার শাস্তি সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন।