সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:১৫ অপরাহ্ন

করোনা হতে যেন জাগি গানের সুরে!

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • Update Time : রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০২০
  • ৩৮৫ Time View

মৃত্যুমিছিল, আতঙ্ক থামাতে পারেনি জীবনের সুর। আতঙ্ককে উপেক্ষা করে রঙ্গ-ব্যঙ্গও চলছে পুরোদমে। করোনাভাইরাসের প্রকোপের আবহে সমাজমাধ্যমে চোখে পড়ছে এমনই নানা ছবি।  

করোনাভাইরাসের প্রকোপে ইটালির একাধিক শহর গৃহবন্দি। সুনসান রাস্তাঘাট। ইটালির নানা জায়গার এমন ছবি গত কয়েকদিন ধরেই ঘুরছে সমাজমাধ্যমে। তবে সেই আতঙ্কের মধ্যেও বাসিন্দাদের জীবনের ছন্দ থেমে নেই। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে ইতালির একাধিক ভিডিয়ো, যেখানে দেখা যাচ্ছে ফাঁকা রাস্তার আশপাশের বাড়িগুলির বারান্দায় জড়ো হয়ে একজোটে গান গাইছেন বাসিন্দারা। সমস্বরে সেই গানের সঙ্গে অনেককে বাদ্যযন্ত্র বাজাতেও দেখা যাচ্ছে।

ইটালিরওই ভিডিয়োর তলায় কমেন্টে প্রশংসার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন নেটিজ়েনরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও যে ইটালির ওই নাগরিকেরা ভেঙে পড়েননি। বরং একসঙ্গে থাকার বার্তা দিচ্ছেন, তা মানবতারই অনন্য নজির। তাঁদের ওই মানসিকতা আসলে যৌথতারই বার্তা, জানাচ্ছেন মনোবিদেরা। মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলছেন, ‘‘নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এমন গানবাজনার সংস্কৃতি ইটালির মানুষজনের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও, গৃহবন্দি থেকে তাঁরা যেভাবে গানবাজনার মাধ্যমে একে অন্যকে খুশি করতে চাইছেন, সেটা আসলে বিপদে একজোট হয়ে থাকারই বার্তা দিচ্ছে।’’ সমাজমাধ্যমেও অনেকে বলেছেন, রোগ যাতে না ছড়ায় সে জন্য গান গাইতে গাইতেও ওই বাসিন্দারা পরস্পরের কাছে আসতে পারছেন না। যে যার বারান্দা থেকেই গলা মেলাচ্ছেন। কিন্তু আসলে তাঁরা যে এই বিপদে পরস্পরের কাছাকাছিই আছেন, সে কথাই জানান দিচ্ছেন।

ভারতেও করোনা-সংক্রমণ ছড়িয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে রঙ্গ-রসিকতা তাতে থেমে নেই। সেই রসিকতায় যেমন এসেছে উত্তম-সুচিত্রার ‘সপ্তপদী’, তেমনই এসেছেন শাহরুখ-কাজলের ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’। করোনাভাইরাস ঠেকাতে নানা সাবধানতার মধ্যে একটি অন্যতম হল ভিড় এড়িয়ে চলা। সেই প্রসঙ্গ টেনেই সপ্তপদীর অমর সংলাপ, ‘‘ও যেন আমাকে টাচ না করে!’’ ঘুরছে মোবাইলে। তেমনই ঘুরছে, শাহরুখের হাত ধরে কাজলের ট্রেনের ওঠার দৃশ্য দিয়ে তৈরি হওয়া মিম, যেখানে দু’জনের মুখেই মাস্ক, কাজলের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার। নানা সংস্থা এখন কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ দিচ্ছে। তা নিয়ে তৈরি একটি কার্টুনে দেখা যাচ্ছে গ্রিক পুরাণের চরিত্র সিসিফাসকে। পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে যাওয়ার বদলে পাথরের গোলা নিয়ে ল্যাপটপ কোলে সিসিফাসও সোফায় বসে।

মনোবিদেরা অনেকে বলছেন, মানুষজনের এমন অভ্যেস নতুন নয়। ঘটনার গুরুত্ব না বুঝে বা বুঝেও তাকে এড়িয়ে চলার জন্য অনেকে এমন লঘু রসিকতার আশ্রয় নেন। এ প্রসঙ্গে অনেকে মনে করাচ্ছেন ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রসঙ্গ। সেই ঝড় আসার আগে থেকেই রসিকতা চলছিল। তার ধ্বংসলীলা টিভিতে দেখার পরেও তা থামেনি। নীলাঞ্জনাদেবীর মতে, ‘‘ইটালির মানুষজন ওই ভয়ঙ্কর বাস্তবের মুখোমুখি হয়েছেন। তারপরে তাঁরা তার মধ্যেও নিজেদের ছন্দ ফিরে পেতে চাইছেন। এখানে এখনও তেমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আসেনি। কিন্তু গুরুত্ব না বুঝে এমন লঘু রসিকতা আসলে সেই পরিস্থিতিটাকে অস্বীকার করার মানসিকতারই পরিচায়ক।’’

বিজ্ঞাপন-স্রষ্টা শৌভিক মিশ্র অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন কোনও গুরুতর বিষয়কেও সহজভাবে নিতে পারাটাও একটা ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য। তাঁর কথায়, ‘‘এখন মিমের যুগে গোটা বিশ্বজুড়েই করোনা নিয়ে নানা মজা করা হচ্ছে। বাঙালি বরাবরই এমন নানা বিষয় নিয়ে মজা করতে ভালবাসে। তাই এই পরিস্থিতিতে সেও নিজের মতো করে তাতে যোগ দিয়েছে।’’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Suchana Community TV
themebazsuchana231231