বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৩১ অপরাহ্ন

করোনায় প্রথম জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ডেক্সামেথাসন

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০
  • ৮৪৮ Time View

করোনা ভাইরাসে প্রথম জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ডেক্সামেথাসন। দামে সস্তা এবং বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে এ ওষুধটি। এটি করোনা ভাইরাসে যারা মারাত্মক অসুস্থ তাদের জীবন রক্ষায় সহায়তা করতে পারে। বৃটেনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি স্বল্প মাত্রার স্টেরয়েড সমৃদ্ধ চিকিৎসা। এটি ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় এক সাফল্য। ভেন্টিলেটরে রাখা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এতে কমে আসে এক-তৃতীয়াংশ। যারা অক্সিজেন নিচ্ছেন, তাদের মৃত্যু কমিয়ে দেয় এক পঞ্চমাংশ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।এতে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস চিকিৎসার জন্য নানা পদ্ধতির পরীক্ষা চলছে। টীকা আবিষ্কার নিয়ে চলছে বিজ্ঞানীদের প্রতিযোগিতা। অনেক স্থানে উদ্ভাবিত টীকার পরীক্ষা চলছে। এমন সময় করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কিছু ওষুধ কাজ করে কিনা তার যে পরীক্ষা, তারই অংশ এই ডেক্সামেথাসন। গবেষকরা বলছেন, বৃটেনে যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যদি তখনই এই ওষুধটি পর্যাপ্ত আকারে ব্যবহার করা হতো, তাহলে কমপক্ষে ৫০০০ মানুষের জীবন রক্ষা পেতো। কারণ, এই ওষুধটি সস্তা। এই সস্তা হওয়ার কারণে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যেসব দরিদ্র দেশ লড়াই করছে তারা বিপুল সুবিধা পাবে।
বিবিসি আরো লিখেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি ২০ জন রোগীর মধ্যে প্রায় ১৯ জনই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে সুস্থ হচ্ছেন। যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের মধ্যেও বেশির ভাগ মানুষ সুস্থ হচ্ছেন। কিন্তু অল্প সংখ্যকের প্রয়োজন হতে পারে অক্সিজেন অথবা মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন। এই জাতীয় উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের দৃশ্যত কিছুটা সাহায্য করতে পারে ডেক্সামেথাসন। এরই মধ্যে অন্য বহুবিধ প্রদাহ কমাতে ব্যবহার করা হয়েছে ওষুধ। যখন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়, তখন যে ক্ষতি হয়, তা থামাতে সাহায্য করতে পারে এই ওষুধ। শরীরের অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়াকে বলা হয় সাইটোকাইন স্টর্ম এবং এটা প্রাণঘাতী হতে পারে।  
ডেক্সামেথাসন নিয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি টিমের নেতৃত্বে পরীক্ষা হয়েছে। তাতে হাসপাতালের প্রায় দুই হাজার রোগীকে দেয়া হয়েছিল ডেক্সামেথাসন। এই ওষুধ দেয়া হয় নি এমন কমপক্ষে চার হাজার রোগীর সঙ্গে তাদেরকে তুলনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যেসব রোগী ভেন্টিলেটরে আছেন, এই ওষুধটি তাদের মৃত্যুঝুঁকি শতকরা ৪০ ভাগ থেকে ২৮ ভাগে কমিয়ে আনে। যেসব রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন তাদের মৃত্যুহারকে শতকরা ২৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ২০ ভাগে নামিয়ে আনে। গবেষক দলের প্রধান অনুসন্ধানকারী প্রফেসর পিটার হরবি বলেছেন, এটাই এখন পর্যন্ত একমাত্র ওষুধ, যা মৃত্যুহারকে কমিয়ে আনে বলে প্রমাণ মিলেছে। মৃত্যুহারকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনে এই ওষুধ। এটা এক বড় সাফল্য।
শীর্ষ গবেষক প্রফেসর মার্টিন ল্যান্ডরে বলেছেন, এই গবেষণা এটাই বলে যে, ভেন্টিলেটরে চিকিৎসাধীন প্রতি আটজন রোগীর মধ্যে এই ওষুধ দিয়ে আপনি একটি প্রাণকে রক্ষা করতে পারবেন। যাদেরকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে প্রতি ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে এই ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করে একটি প্রাণ রক্ষা করতে পারবেন। তার ভাষায়, এটা হলো সুস্পষ্ট একটি সুবিধা। এই চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ব্যবহার করতে হয় ১০ দিন পর্যন্ত। প্রতিজন রোগীর ক্ষেত্রে এ জন্য খরচ প্রায় ৫ পাউন্ড। এটা এমন একটা ওষুধ যা বিশ্বজুড়ে পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেছেন, উপযুক্ত সময়ে কোনো বিলম্ব না করে এই ওষুধটি রোগীদের দেয়া উচিত হাসপাতাল থেকে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Suchana Community TV
themebazsuchana231231