করোনার ভয়াবহতার মধ্যেই আতঙ্ক ছড়াছে এলএসডি বা লাম্পি স্কিন রোগের ভাইরাস।চামড়ার রোগ সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গবাধিপশু।মৃত্যুর হার খুবই কম হলেও পশুর স্বাস্থ্যহানীর কারণে অর্থনৈতিক ধসের শঙ্কায় কাটছে কৃষক ও খামারিদের। দেশের অনেক এলাকার মতো ঠাকুরগাঁওয়ের সকল উপজেলার কৃষক ও খামারিদের অবস্থা প্রায় একই। জেলায় গবাদিপশুকে বাঁচাতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকরাও। উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, লাম্পি স্কিন রোগটি গবাদিপশুর নুতন একটি রোগ যার প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। এ রোগে আক্রান্ত পশুর প্রথমে সামনের পা ফুলে যায়। তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে শরীরে বড় বড় গুটি দেখা দেয়। এক সপ্তাহ পরে গুটিগুলো গলে গিয়ে স্থানে স্থানে ঘা হয়। ঘা থেকে অনবরত তরল পদার্থ নিঃসৃত হতে থাকে। কখনো সিনার নিচে বড় থলির মতো হয়ে পানি জমে থাকে। তখন কিছুই খেতে চায় না বলে গবাদিপশু শুকিয়ে যায়। সংক্রমণ বেশি হলে পশু মারাও যেতে পারে। তবে এতে মৃত্যুহার খুবই কম। বৃহ:বার জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় বাড়িতেই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত একাধিক পশু রয়েছে। গড়েয়া ইউনিয়নের মিলন পুর গ্রামে জাহাঙ্গীর ইসলামের ও আবদুল্লাহ মাস্টারের খামারে গিয়ে দেখা যায় তাদের বেশ কয়েকটি বিদেশি জাতের গাভি ও বাছুর এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তারা সর্বদাই প্রাণীসম্পদ অফিসের চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করে যত্ন নিচ্ছেন। পশু থাকার ঘরগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। এছাড়াও জেলার চণ্ডিপুর গ্রামের হাবিব মিয়া,ও বাবু সহ অন্যান্য খামারীর গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পল্লী চিকিৎসক এরশাদ জানান, তার বাড়িসহ আশেপাশে বাড়ির শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল হতে রাত পর্যন্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি যেয়ে আক্তান্ত গরুর চিকিৎসা প্রদান করে যাচ্ছে। পশু চিকিৎসক রুবেল জানান, তারা গবাদিপশুর চিকিৎসা করতে হিমসিম খাচ্ছেন। জেলায় এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেয়নি। জেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের ভেটেররিনারি সার্জনের পরামর্শক্রমে তারা আক্তান্ত পশুর চিকিৎসা প্রদান করছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মামুন -আর – রশিদ বলেন, ল্যাম্পি স্কিন রোগটি বিশেষ করে মশার কাপড়ে ও আক্রান্ত প্রাণীর লালা হতে ছড়ায়। এর এখনো কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয় নি। তাই গরুর মালিকদের গোয়াল ঘর পরিষ্কার করা ও মশা মাছি নিয়ন্ত্রণ করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও অফিসের পাশাপাশি গরু মালিকদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে আক্রান্ত গরুর অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশান, ব্যাথানাশক ট্যাবলেট ও অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা চলছে। তবে এ রোগে গরুর মৃত্যুর হার একেবারেই কম